জুলাই ২০, ২০১৫

বাংলা কবিতার কোটেশন-২

বাংলা কবিতার কোটেশন-২





১. 

অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই - প্রীতি নেই - করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব'লে মনে হয়
মহ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়।


অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ - জীবনানন্দ দাশ

২.
        
  যখন আমি জন্ম নিলাম, আমি কালো;
        
  যখন আমি বেড়ে উঠলাম, আমি কালো।
        
 যখন আমি সূর্যের তাপে অবস্থান করি,
      
   আমি কালো;
     
   যখন আমি অসুস্থ, আমি কালো।
    
    যখন আমি মৃত, আমি কালো।
      
  আর তুমি সাদা সহচর,
       
  যখন জন্ম নেও, তুমি গোলাপি;
        
 যখন বেড়ে উঠ, তুমি সাদা;
        
 যখন তুমি সূর্যের তাপে অবস্থান
        
 করো,
      
  তুমি লাল।
        
 যখন তুমি শীতল আবহাওয়া তে থাকো,
      
  তুমি নীল;
       
 যখন তুমি ভীত, তুমি হলুদ।
      
  যখন তুমি অসুস্থ, তুমি সবুজ;
      
  আর যখন তুমি মৃত, তুমি ধূসর।
       
 আর তুমি কিনা আমাকে বল
   
    কালারড !!!!

কবিতার নাম কালার  (Color) 
 আফ্রিকার এক পিচ্চির লেখা একটা কবিতা ২০০৫    এর শ্রেষ্ঠ  কবিতা বলে নমিনেট করা হয়ছিল। 
বাংলায় তার অনুবাদ ...। 

৩.   
                               
 তুমি আমায় ভালোবাসো তাই তো আমি কবি।
আমার এ রূপ-সে যে তোমায় ভালোবাসার ছবি।।
আপন জেনে হাত বাড়ালো-
আকাশ বাতাস প্রভাত-আলো,
বিদায়-বেলার সন্ধ্যা-তারা
পুবের অরুণ রবি,-
তুমি ভালোবাস বলে ভালোবাসে সবি?


কবি-রাণী – কাজী নজরুল ইসলাম
  

৪.                             
 আমরা শক্তি আমরা বল
                        
আমরা ছাত্রদল।
মোদের পায়ের তলায় মূর্ছে তুফান
                        
ঊর্ধ্বে বিমান ঝড়-বাদল।
                                
আমরা ছাত্রদল।।


ছাত্রদলের গান - কাজী নজরুল ইসলাম   

৫. 

 তাজমহলের পাথর দেখেছে, দেখিয়াছ তার প্রাণ?
  অন্তরে তার মোমতাজ নারী, বাহিরেতে শা-জাহান।


 নারী - কাজী নজরুল ইসলাম
  
৬. 

পুরুষ এনেছে দিবসের জ্বালা তপ্ত রৌদ্রদাহ,
কামিনী এনেছে যামিনী-শান্তি, সমীরণ, বারিবাহ।
দিবসে দিয়াছে শক্তি-সাহস, নিশীথে হয়েছে বধু,
পুরুষ এসেছে মরুতৃষা লয়ে, নারী যোগায়েছে মধু।
শস্যক্ষেত্র উর্বর হ, পুরুষ চালাল হল,
নারী সে মাঠে শস্য রোপিয়া করিল সুশ্যামল।
নর বাহে হল, নারী বহে জল, সেই জল-মাটি মিশে
ফসল হইয়া ফলিয়া উঠিল সোনালি ধানের শীষে।


নারী - কাজী নজরুল ইসলাম
  

৭.

জগতের যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান
মাতা ভগ্নী ও বধুদের ত্যাগে হইয়াছে মহীয়ান।
কোন্ রণে কত খুন দিল নর, লেখা আছে ইতিহাসে,
কত নারী দিল সিঁথির সিঁদুর, লেখা নাই তার পাশে।
কত মাতা দিল হৃদয় উপাড়িকত বোন দিল সেবা,
বীরের স্মৃতি-স্তম্ভের গায়ে লিখিয়া রেখেছে কেবা?
কোন কালে একা হয়নি কজয়ী পুরুষের তরবারি,
প্রেরণা দিয়াছে, শক্তি দিয়াছে বিজয়-লক্ষ্ণী নারী।
রাজা করিতেছে রাজ্য-শাসন, রাজারে শাসিছে রানী,
রানির দরদে ধুইয়া গিয়াছে রাজ্যের যত গ্লানি।

নারী - কাজী নজরুল ইসলাম 
  
৮.

দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার
লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুশিয়ার!

কান্ডারী হুশিয়ার!  -কাজী নজরুল ইসলাম

৯.

অসহায় জাতি মরিছে ডুবিয়া, জানেনা সন্তরণ,
কান্ডারী! আজ দেখিব তোমার মাতৃমুক্তিপণ!
হিন্দু না ওরা মুসলিম?” ওই জিজ্ঞাসে কোন জন?
কান্ডারী! বল ডুবিছে মানুষ, সন্তান মোর মার!


কান্ডারী হুশিয়ার!  -কাজী নজরুল ইসলাম


১০.
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া
করিতে পারিনি চিৎকার
আমি চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া
করিতে পারিনি চিৎকার
বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার

কতটুকু অশ্রু গড়ালে হৃদয় জলে সিক্ত
কত প্রদীপ শিখা জ্বালালেই জীবন আলোয় উদ্দীপ্ত
কত ব্যথা বুকে চাপালেই তাকে বলি আমি ধৈর্য
নির্মমতা কতদূর হলে জাতি হবে নির্লজ্জ


বিডিআর হত্যাকাণ্ডে হায়দার হোসেনের গাওয়া একটি গান 


0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন